সেট
’সেট’ শব্দটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। যেমন: ডিনার সেট, সোফাসেট, স্বাভাবিক সংখ্যার সেট, বা এক সেট বই ইত্যদি। জার্মান গণিতবিদ জর্জ ক্যান্টর (১৮৪৫-১৯১৮) সর্বপ্রথম সেট সর্ম্পকে ধারণা ব্যাখ্যা করেন। তিনি অসীম সেটের ধারণা প্রদান করে গণিত শাস্ত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। সেট সর্ম্পকে তাঁর ব্যাখ্যা ’সেট তত্ত্ব’ বা ’ঝবঃ ঞযবড়ৎু’ নামে পরিচিত।
সেট কাকে বলে?
মূলত বাস্তব বা চিন্তাজগতের সু-সংজ্ঞায়িত বস্তুর সমাবেশ বা সংগ্রহকে সেট বলে। যেমন: ঝ = {১,৪,৯,১৬,২৫,৩৬,৪৯,৬৪,৮১,১০০} এই সেটটি ১০ থেকে বড় নয় এমন স্বাভাবিক সংখ্যার সেট। কিংবা আমরা বলতে পারি এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর সেট, প্রথম দশটি বিজোড় স্বাভাবিক সংখ্যার সেট ইত্যাদি।
সেটের উপাদান:
সেটের অর্ন্তভুক্ত সকল বস্তুই সেটের উপাদান বা যে সকল বস্তু নিয়ে সেট গঠিত হয় তাদের প্রত্যেককে ঐ সেটের উপাদান বলে। সেট গুলোকে সাধারণত ইংরেজি বড় হাতের অক্ষর অ,ই,ঈৃৃৃ..ঢ,ণ,ত ইত্যাদি দ্বারা এবং এর উপাদানগুলোকে ইংরেজি ছোট হাতের অক্ষর ধ,ন,পৃৃ.ী,ু,ু ইত্যাদি দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং সেটের সকল উপাদানকে দ্বিতীয় বন্ধনীর { } মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করা হয়। মনে করি, ী বর্ণটি- অ সেটের একটি উপাদান তাহলে একে লেখা হয় অ={ী} এবং গাণিতক ভাবে ী € অ প্রতিক দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
সেট প্রকাশের পদ্ধতি:
সেটকে সাধারণত দুই ভাবে প্রকাশ করা হয়। ১. তালিকা পদ্ধতি ও ২. সেট গঠন পদ্ধতি।
তালিকা পদ্ধতি: যে সেটে সকল উপাদান সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ পূর্বক দ্বিতীয় বন্ধনীর দ্বারা আবদ্ধ করে প্রকাশ করা হয় তাকে তালিকা পদ্ধতি বলে।
যেমন: অ ={২,৩}, ই = {২,৩,৫,৭} ইত্যাদি।
সেট গঠন পদ্ধতি: সেট প্রকাশের যে পদ্ধতিতে সেটের উপাদানগুলো উল্লেখ না করে বরং উপাদান নির্ধারণের জন্য সাধারণ ধর্মের উল্লেখ করা হয় তাকে সেট গঠন পদ্ধতি বলে। যেমন:
সেটের প্রকারভেদ:
সসীম সেট: যে সেটের উপাদান সংখ্যা নির্দিষ্ট বা গণনা করে নির্ধারণ করা যায় তাকে সসীম সেট বলে। যেমন: ৬ -গুণনীয়কসমূহের সেট অ={১,২,৩,৬}
অসীম সেট: যে সেটের উপাদান সংখ্যা গণনা করে নির্ধারণ করা যায় না তাকে অসিম সেট বলে। যেমন: সকল স্বাভাবিক সংখ্যার সেট, ঢ={১,২,৩ৃৃ..}। এখানে, ঢ- সেটের উপাদান সংখ্যা অসংখ্য যা গণনা করে শেষ করা যায় না, তাই সকল স্বাভাবিক সংখ্যার সেট একটি অসিম সেট।
ফাঁকা সেট: যে সেটের কোন উপাদান নেই তাকে ফাকা সেট বলে। ফাঁকা সেটকে ০০০০ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ভেনচিত্র (ঠবহহ-ফরধমৎধস): জন ভেন (১৮৩৪-১৮৮৩) চিত্রের সাহায্যে সেট প্রকাশ করার রীতি প্রকাশ করেন। তাঁর নামানুসারে চিত্রগুলো ভেনচিত্র নামে পরিচিত।
উপসেট: কোন সেটের উপাদান থেকে যতগুলো সেট গঠন করা যায় তারা প্রত্যেকে ঐ প্রদত্ত সেটের উপসেট। যেমন: মনে করি, ঢ= {ধ,ন,প} সেট। এখন, ঢ সেটের উপদানগুলো নিয়ে আমরা {ধ,ন}, {ধ}, {ন} সেটগুলো গঠন করতে পারি। এই {ধ,ন}, {ধ}, {ন} সেটগুলো হলো প্রদত্ত ঢ সেটের উপসেট। মনে রাখতে হবে ফাঁকা সেট যেকোনো সেটের উপসেট।
ছেদ সেট: দুই বা ততোধিক সেটের সাধারণ উপাদান নিয়ে গঠিত সেটকে ছেদ সেট বলে।
নিñেদ সেট: দুটি সেটের ছেদ সেট যদি হয় ফাঁকা সেট অর্থাৎ দুটি সেটের উপাদানগুলোর মধ্যে যদি কোন সাধারণ উপাদান না থাকে তবে সেট দুটি একে অপরের নিñেদ সেট।