December 3, 2024 4:44 am

রাজা রামোহন রায়:

জন্ম: ৫ মে, ১৭৭৪; হুগলি জেলার রাধানগর নামক স্থানে।
মৃত্যু: ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৮৩৩। ব্রিস্টল স্টেপলেন; মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে।

ছদ্মনাম: শিবপ্রসাদ রায়।
উপাধি: রাজা [ ১৮৩০ সালে দিল্লির বাদশাহ কর্তৃক প্রদত্ত]

তিনি ছিলেন ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক এবং সতীদাহ প্রথা রোধকল্পে বিশেষ ভ’মিকা পালন করেন।
একেশ্বরবাদের উপর ভিত্তি করে প্রবর্তন করেন ব্রাহ্মধর্মমত তথা ব্রাহ্ম-সমাজ, প্রতিষ্ঠা করেন আত্মীয়সভা।

সম্পাদিত পত্রিকা: ব্রাহ্মণ সেবধি, সম্বাদ কৌমুদী, মিরাতুল আখবার (ফরাসি ভাষায়)।
রাজা রামমোহন রায় ফরাসি ভাষায় রচনা করেন তুহফাতুল মুয়াহহিদ্দীন (১৮০৩)
বাঙ্গালি কতৃক প্রথম বাংলা ব্যাকরণ গৌড়ীয় ব্যাকরণের রচয়িতা।


গ্রন্থসমূহ: বেদান্ত গ্রন্থ ( ১৮১৫), বেদান্তসার (১৮১৫), ভট্টাচার্যের সহিত বিচার ( ১৮১৭, গোস্বামীর সহিত বিচার (১৮১৮), প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ (১৮১৮), পথ্যপ্রদান, গৌড়ীয় ব্যাকরণ।

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত:

জন্ম: ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ১৮১২ সালে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁচপাড়ার শিয়ালডাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন।
মৃত্যু: ১৮৫৯।
ছদ্মনাম: ভ্রমণকারী বন্ধু।

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত মধ্য ও আধুনিক যুগের মিলনকারী তথা যুগসন্ধিক্ষণের কবি।
তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম পরিবেশ সচেতন কবি।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাকে খাঁটি বাঙ্গালি কবি বলে অভিহিত করেন।
সম্পাদিত পত্রিকা: সংবাদ প্রভাকর, সংবাদ রত্নাবলী, সংবাদ সাধুরঞ্জন, পাষণ্ডপীড়ন।
সাহিত্যকর্ম: কালীকীর্তন (১৮৩৩), হিত প্রভাকর, বোধেনু বিকাশ, কাব্যসংগ্রহ, ভারতচন্দ্র রায় গুণাকরের জীবনবৃত্তান্ত, প্রবোধ প্রভাকর (কবিতা সংকলন)।
কবিতা: তপসে মাছ, স্বদেশ, নীলকর, বাঙালি মেয়ে, আনারস।

মদনমোহন তর্কালঙ্কার:

জন্ম: ১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দ; নদীয়া জেলার বিল্বগ্রামে।
মৃত্যু: ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ।
মদনমোহন তর্কলঙ্কার পুরাতন রীতির শেষ কবি এবং নবজাগরণের অগ্রদূত।
তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যাপক ছিলেন এবং শিশুদের জন্ম পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।
তিনি ১৪টি বই সম্পাদনা করেন।

গ্রন্থ: রস তরঙ্গিনী (১৮৩৪), বাসবদত্তা (১৮৩৬), শিশুশিক্ষা (১৮৪৯-৫০) [শিশুশিক্ষা গ্রন্থটি তিন খণ্ডে রচিত।]

অক্ষয়কুমার দত্ত:

জন্ম: ১৮২০ খ্রিষ্টাব্দ।
মৃত্যু: ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দ।
প্রথম বাঙ্গালি বিজ্ঞানমনস্ক লেখক।
ঈশ^রচন্দ্র গুপ্তের সহায়তায় সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে আনন্দমোহন নামে প্রথম কাব্য রচনা করেন।
সম্পাদিত পত্রিকা: তত্তবোধিনী।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:

জন্ম: ২৬ মে, ১৮২০; পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।
মৃত্যু: ২৯ জুলাই, ১৮৯১।
পারিবারিক উপাধি: বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বাক্ষর করতেন ঈশ^রচন্দ্র শর্মা নামে।
ছদ্মনাম: কস্যচিৎ উপর্যুক্ত ভাইপোস্য।

উপাধি: বাংলা গদ্যের জনক, বিদ্যাসাগর, দয়ার সাগর।
বিদ্যাসাগর উপাধি: সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের কারনে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে লাভ করেন বিদ্যাসাগর উপাধি।
ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৯৪৭ সালে বাংলা গদ্যে প্রথম যতি চিহ্নের প্রবর্তন করেন।
তাঁর প্রবর্তিত যতিচিহ্নের সংখ্যা: ১৫টি।
সম্পাদিত পত্রিকা: সর্বশুভকরী।
রচিত ব্যাকরণ: ব্যাকরণ কৌমুদী।

ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত মৌলিক গ্রন্থ:
বোধোদয় (১৮৫১), ঋজুপাঠ (১৮৫১), বর্ণপরিচয় (১৮৫৫), কথামালা (১৮৫৬), সংস্কৃত ভাষা ও সংস্কৃত সাহিত্য বিষয়ক প্রস্তাব (১৮৫৩), বিধাব বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব (১৮৫৫), বহুবিবাহ রহিত উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক বিচার (১৮৭১), প্রভাবতী সম্ভাষণ (১৮৬৩), আখ্যানমঞ্জুরী (১৮৬৩), শব্দমঞ্জুরী (১৮৬৪), শ্লোকমঞ্জুরী (১৮৯০), অতি অল্প হইল (১৮৭৩), আবার অতি অল্প হইল (১৮৭৩), ব্রজবিলাস (১৮৮৪), রত্ন পরীক্ষা (১৮৮৬), ভ’গোল খগোল বর্ণনাম (১৮৯২), বিদ্যাসাগর চরিত/ আত্মচরিত (১৮৯২), বিধবা বিবাহ ও যশোর হিন্দু ধর্ম সক্ষিণী সভা।

ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগর অনুদিত সাহিত্যকর্ম:
১) হিন্দি ভাষার লাল্লুজি রচিত: বৈতাল পচ্চিসী থেকে বেতালপঞ্চবিংশতি (১৮৪৭)।
২) সংস্কৃত ভাষায় কালিদাস রচিত: অভিজ্ঞান শকুন্তলম থেকে শকুন্তলা (১৮৫৪)।
৩) বাল্মীকি রচিত রামায়ণের উত্তরকাণ্ড ও ভবভুতি রচিত উত্তর রামচরিত থেকে সীতার বনবাস (১৮৬০)।
৪) শেকস্পিয়র রচিত ঈড়সবফু ড়ভ ঊৎৎড়ৎ থেকে ভ্রান্তিবিলাস (১৮৬৯)।
৫) মার্শম্যান রচিত ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ইবহমধষ থেকে বাঙ্গালার ইতিহাস (১৮৭৮)।
৬) চেম্বার রচিত জঁফরসবহঃং ড়ভ কহড়ষিবফমব থেকে বোধোদয় (১৮৫১)।
৭) চেম্বার রচিত ইরড়মৎধঢ়যরপং থেকে জীবনচরিত (১৮৪৯)।
৮) ঈশপের ফেবলস থেকে কথামালা (১৮৫৬)।

মীর মশাররফ হোসেন

জন্ম: ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ; কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীর গৌরী নদীর তীরে লাহিনীপাড়া গ্রামে।
মৃত্যু: ১৯ ডিসেম্বর, ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ।
ছদ্মনাম: গাজী মিয়া।
সাহিত্যগুরু: কাঙ্গাল হরিনাথ।

পত্রিকা: আজিজন্নেহার ও হিতকরী।
প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ: রত্নাবতী। [ এটি বাঙ্গালি মুসলাম রচিত প্রথম উপন্যাস।
বাজার থেকে প্রত্যাহারকৃত প্রবন্ধ: গো-জীবন।
উপন্যাস: রত্নবতী (১৮৬৯), গাজী মিয়ার বস্তানী (১৮৯৯), বিষাদ-সিন্ধু, উদাসীন পথিকের মনের কথা (১৮৯০)।

নাটক: বসন্তকুমারী (১৮৭৩), জমীদার দর্পণ ( ১৮৭৩), বেহুলা গীতাভিনয় (১৮৮৯), টালা অভিনয় ( ১৮৯৭)।
প্রহসন: এর উপায় কি ( ১৮৭৫), ভাই ভাই এইতো চাই, ফাঁস কাগজ।
কাব্য: মোসলেম বীরত্ব (১৯০৭), গোরাই ব্রীজ (১৮৭৩)।
আত্মজীবনী: আমার জীবনী (১৯১০), বিবি কুলসুম/ আমার জীবনীর জীবনী (১৯১০)।
প্রবন্ধ: গো-জীবন (১৮৮৯)।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়:

জন্ম: ২৬ জুন, ১৮৩৮; পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার কাঁঠালপাড়া গ্রামে।
মৃত্যু: ৮ এপ্রিল, ১৮৯৪; বহুমুত্র রোগে।
উপাধি: সাহিত্য সম্রাট, বাংলা প্রথম সার্থক উপন্যাস রচয়ীতা, বাংলার স্কট।
সম্পাদিত পত্রিকা: বঙ্গদর্শন।
প্রথম উপন্যাস: জধলসড়যড়হ’ং ডরভব
প্রথম বাংলা উপন্যাস: দুর্গেশনন্দিনী।

বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক উপন্যাস: কপালকুণ্ডলা।
শ্রেষ্ঠ উপন্যাস: কৃষ্ণকান্তের উইল।
শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক উপন্যাস: রাজসিংহ।

ত্রয়ী উপন্যাস: আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরাণী, সীতারাম।
মোট উপন্যাস: ১৪টি।
মোট গ্রন্থ: ৩৪টি।

বাজার থেকে প্রত্যাহারকৃত প্রবন্ধ: সাম্য।
উপন্যাস: দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫), কপালকুণ্ডলা (১৮৬৬), মৃণালিনী (১৮৬৯), বিষবৃক্ষ (১৮৭৩), ইন্দিরা (১৮৭৩), যুগলাঙ্গুরীয় (১৮৭৪), চন্দ্রশেখর (১৮৭৫), রজনী (১৮৭৭), কৃষ্ণকান্তের উইল (১৮৭৮), রাজসিংহ (১৮৮২), আনন্দমঠ (১৯৮২), দেবী চৌধুরাণী (১৮৮৫), রাধারাণী (১৮৮৬), সীতারাম (১৮৮৭)।
প্রবন্ধ: কমলাকান্তের দপ্তর, মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত, লোক রহস্য, বিজ্ঞান রহস্য, কৃষ্ণ চরিত্র, সাম্য, বঙ্গদেশের কৃষক, ধর্মতত্ত্ব, বিবিধ প্রবন্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *